নেপালের পদচ্যুত প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি ফের বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন। সাম্প্রতিক এক চিঠিতে সরাসরি ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন তিনি এবং দাবি করেন যে তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করার পিছনে ভারতেরই ভূমিকা রয়েছে। বিশেষত অযোধ্যা রামমন্দির ও লিপুলেখ সীমান্ত সংক্রান্ত তাঁর বক্তব্যগুলো রাজনৈতিকভাবে বড় ধাক্কা দিয়েছে — এমনটাই তিনি জানান। বর্তমানে শিবপুরী সেনা ব্যারাকে অবস্থান করলেও সেখান থেকেই ভারতের বিরুদ্ধে তীব্র মন্তব্য করেছেন ওলি।
অযোধ্যা বিতর্ক: ওলির দাবি ও প্রতিক্রিয়া
ওলি আগে থেকেই অযোধ্যা রামমন্দির সংক্রান্ত ভারতের প্রচলিত ইতিহাসকে চ্যালেঞ্জ করে আসছিলেন। তাঁর দাবি, ভগবান রামের জন্ম ইতিহাস অনুযায়ী ভারতের অযোধ্যায় নয় বরং নেপালের থোরি গ্রামে। পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করেন যে ভারত নেপালের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে দখল করেছে। এমন বক্তব্য ভারতের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছিল।
লিপুলেখ সীমান্ত বিবাদ
অযোধ্যার বিষয় ছাড়া, লিপুলেখ পাস নিয়েও ওলি ভারতবিরোধী অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল লিম্পিয়াধুরা, লিপুলেখ ও কালাপানি নেপালের অবিচ্ছেদ্য অংশ — যেখানে ভারত দীর্ঘদিন ধরে ভিন্ন অবস্থান নেবে। এই সীমান্ত দ্বন্দ্ব দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার অন্যতম কারণ।
সোশ্যাল মিডিয়া নিষেধাজ্ঞা ও তরুণদের প্রতিক্রিয়া
সম্প্রতি নেপাল সরকার ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, এক্সসহ মোট ২৬টি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে দেশের তরুণ প্রজন্ম রাস্তায় নেমে প্রতিবাদকারী বিক্ষোভ শুরু করে। ৮ সেপ্টেম্বর বিক্ষোভ অব্যাহত থেকে কিছু স্থানে সহিংসতায় রূপ নেয় — রাষ্ট্রীয় ভবন ও ব্যক্তিগত বাসভবনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। চাপে পড়ে শেষে কেপি শর্মা ওলি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
ওলি দাবি করেছেন যে এই গণআন্দোলনের পিছনে ভারতের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সমর্থন রয়েছে, এবং তাঁর অযোধ্যা-লিপুলেখ বিষয়ে সরব হওয়ার ফলেই রাজনৈতিকভাবে তাঁকে সরানো হয়েছে।
এই ঘটনায় দুই দেশীয় সম্পর্ক তাত্পর্যপূর্ণভাবে উত্তপ্ত থাকবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন। যাতায়াত, কূটনীতিক পর্যায় ও সীমান্ত নিয়ে আলোচনার ভবিষ্যৎ এখন উৎসাহ-সহ প্রতীক্ষার মধ্যে।
0 Comments